রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

চলমান ইউক্রেন সংকটের পটভূমিতে রাশিয়ার তেল না কেনার জন্য ইউরোপীয় মিত্রদের চাপের বিপরীতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ ৪৩ শতাংশ বা প্রতিদিন ১ লাখ ব্যারেল বাড়িয়েছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি সেক্রেটারি মিখাইল পপভ রোববার রুশ গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
সমালোচকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার ইউরোপীয় মিত্রদের কথা না ভেবে নিজের স্বার্থের কথা ভাবছে। মঙ্গলবার চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, ইউরোপের উচিৎ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অনুরূপ ‘বিস্ময়’ আশা করা। মিখাইল পপভ বলেন, ‘এছাড়াও, ওয়াশিংটন তার কোম্পানিগুলোকে রাশিয়া থেকে খনিজ সার রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে, সেগুলোকে প্রয়োজনীয় পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন ও ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার তেল আমদানি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে, যদিও ইউরোপ অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভর করে। রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য- উভয়ের চাপের সম্মুখীন ইউরোপ। ব্রিটেন ঘোষণা করেছে যে, তারা বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করবে।
ইতোমধ্যে, মার্কিন ট্রেজারি রাশিয়া থেকে তেল এবং কয়লা আমদানির চুক্তি শেষ করার সময়সীমা ২২ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে। ইস্ট চায়না নর্মাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর রাশিয়ান স্টাডিজের সহকারী রিসার্চ ফেলো কুই হেং গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, রাশিয়ার প্রতি মার্কিন নীতি দুটি দিককে কেন্দ্র করে। একটি হচ্ছে রাশিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং যৌথ মতাদর্শকে মোকাবেলা করার জন্য উদারনীতি এবং অন্যটি হচ্ছে, মার্কিন জাতীয় স্বার্থ পরিবেশন করার জন্য বাস্তববাদ।
কুই হেং বলেন, ‘মতাদর্শগতভাবে রাশিয়ার মোকাবেলা করার প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। এক্ষেত্রে বাস্তবতার প্রয়োজনের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র সস্তা দামে রাশিয়ার জ্বালানি কেনে এবং দেশীয় স্বার্থের জন্য উচ্চ মূল্যে ইউরোপের কাছে বিক্রি করে। শেষ পর্যন্ত, ইউরোপ শিকাওে পরিণত হয়; ইউরোপীয় সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যেতে থাকে এবং ইউরোর বিপরীতে ডলারের সুবিধা বাড়তে সহায়তা করে।