ইউক্রেনকে দূরপাল্লার রকেট দেবে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল পুরোপুরি দখলে নেয়ার দ্বারপ্রান্তে রাশিয়া। এমন অবস্থায় প্রচ- চাপে থাকা ইউক্রেনকে বাঁচাতে দেশটিকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাশিয়াও এর বিরুদ্ধে পাল্টা হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছে। মস্কোর অভিযোগ, ইউক্রেনে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর ঘোষণার পর রাশিয়া কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলছে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণা তৃতীয় কোন দেশের ইউক্রেন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবেই উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। এ ধরণের সরবরাহ শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের নেতাদের ফিরে আসার ক্ষেত্রে কোন ভূমিকা রাখবে না।
শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ইউক্রেনের বিপদ বুঝতে পেরে জার্মান সরকারও দেশটিকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, আধুনিক এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনকে তাদের পুরো শহরকে রাশিয়ার বিমান হামলা থেকে রক্ষা করতে সমর্থ হবে। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পেলে সেটি ইউক্রেনকে দূরের লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও এতদিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিতে চায়নি। কারণ, ইউক্রেন এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। সেটি হলে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড় দেবে না। তবে এখন যুক্তরাষ্ট্র বলছে যে তেমন কিছু না করার বিষয়ে কিয়েভ নিশ্চয়তা দিয়েছে। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, মারণাস্ত্র রাশিয়ার সাথে আলোচনায় ইউক্রেনকে শক্তিশালী করবে এবং একটি কূটনৈতিক সমাধানের পথ সুগম করবে।
নতুন যেসব অস্ত্র দেয়া হবে তার মধ্যে আছে, এম ১৪২ ‘হাই মবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম’ বা এইচআইএমএআরএস। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যে অস্ত্র সরবরাহ করবে তা ৭০ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এসব অস্ত্র রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলায় ব্যবহৃত হবে না নিশ্চিত করার পরই যুক্তরাষ্ট্র তা সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলেনস্কি নিজেও এক সাক্ষাতকারে তা নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে ইউক্রেনের কাছে যেসব কামান ও রকেট লঞ্চার রয়েছে, তার চাইতেও যুক্তরাষ্ট্রের এই রকেট অনেক বেশি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এগুলো রাশিয়ার রকেটের চেয়েও নিখুঁত বলে ধারণা করা হয়। এছাড়াও এগুলো অনেক বেশি দ্রুত রিলোড করা যায় এবং খুব দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করা সম্ভব।