ভিলেন গাঙ্গুয়ার সঙ্গী এখন আয়াতুল কুরছি

ঢাকাই সিনেমার পরিচিত মুখ মোহাম্মদ পারভেজ চৌধুরী। দাপুটে এই খলঅভিনেতা পর্দায় গাঙ্গুয়া নামে পরিচিত। ব্রেইন স্ট্রোক করে পাঁচ বছর আড়ালে ছিলেন তিনি। এর মধ্যে দুই বছর প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। সুস্থ হয়ে আবারও কাজে ফিরেছেন। বিভীষীকাময় সেই দিনগুলোর কথা যুগান্তরের পাঠকদের শোনালেন গুণী এই অভিনেতা।
যুগান্তরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গাঙ্গুয়া বলেন, আমি পাঁচ বছর অসুস্থ ছিলাম। ব্রেন স্ট্রোক হয়েছিল। এরমধ্যে দুই বছর প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে থাকতাম। শরীরটা নাড়াতে পারতাম না। কথা বলতে পারতাম না। মুখ বাঁকা হয়ে গিয়েছিল। এমনকি খাওয়া, প্রস্রাব-পায়খানা বিছানায়ই করতাম। সেসময় আমার স্ত্রী ও মেয়ে আমার সেবা করেছে। একটা সময় আমি ভাবলাম, এভাবে চলতে পারে না। দোয়া করতাম- আল্লাহ হয় আমাকে সুস্থ করে দেন, না হয় দুনিয়া থেকে নিয়ে যান। এর পর আমি নামাজ পড়া শুরু করি। আগের মতো যেন কথা বলতে পারি সেজন্য পবিত্র কোরান পড়তে থাকি। সর্বপ্রথম আয়াতুল কুরছি মুখস্ত করি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আস্তে আস্তে আমি সুস্থ হয়ে উঠি। অসুস্থ থাকাকালীন আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন গাঙ্গুয়া। তিনি বলেন, আমি ৮তলা বাড়িতে থাকি। যদি একবার ছাদে উঠতে পারতাম, তাহলে সেখান থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতাম। এমনকি কয়েকবার ফজরের নামাজ আদায় করে রাস্তায় গিয়ে বড় বড় গাড়ি খুঁজেছিলাম। যাতে গাড়ির নিচে পড়ে আত্মহত্যা করতে পারি।
কিন্তু আল্লাহর কুদরতে সেসময় কোনো গাড়ি আমার সামনে পড়েনি। যদি পড়ত, তাহলে আমি গাঙ্গুয়া আজ আপনার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারতাম না। তিনি যোগ করেন, ডাক্তাররা আমাকে দেখে অবাক হন। ব্রেইন স্ট্রোকের রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয় না। কিছু না কিছু শারীরিক সমস্যা থাকেই। কিন্তু আমি পুরোপুরি সুস্থ। দেখে কেউ বুঝতেই পারবেন না যে, আমি সেই ব্রেইন স্ট্রোক করা গাঙ্গুয়া। এখন আমি আগের মতোই সবল। নিয়মিত কাজও করছি। আমি কিভাবে সুস্থ হলাম আল্লাহ পাকই ভালো জানেন। আমি নিয়মিত ব্যায়ম করছি। নামাজ পড়ছি। যেখানে যে অবস্থায়ই থাকি না কেন, নামাজ ছাড়ব না। আল্লাহ-রাসুল (স.) এর নাম নিয়ে পথ চলি। আমার চলার পথের সঙ্গী এখন আয়াতুল কুরছি।
ভক্তদের উদ্দেশ্যে গাঙ্গুয়া বলেন, আমার মতো যারা অসুস্থ আছেন তাদের বলব, আপনারা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখেন। আল্লাহ-রাসুল (স.) এর নাম নেন। নামাজ ও কোরান তেলাওয়াত করেন। আল্লাহ আপনাদের সুস্থ করে তুলবেন। কোনো মানুষের কাছে কিছু চাইলে, সে আপনাকে কতটুকুইবা দিবে। আল্লাহ যদি সামান্যও দেন, তাহলে দেখবেন রহমতের তুলনায় আপনার ঘর ছোট হয়ে গেছে। আমি গাঙ্গুয়া তার বড় প্রমাণ। একটি কথাও আমি মিথ্যা বলিনি। সব সত্যি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন।