লাইম লাইটে নানক

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এখন লাইম লাইটে। আওয়ামী লীগ সভাপতির আস্থাভাজন নেতা হিসেবে তিনি ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছেন। তাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, সে দায়িত্ব তিনি নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন এবং দায়িত্ব পালন করে তিনি শুরু আওয়ামী লীগেই নয়, দেশবাসীরও প্রশংসা কুড়িয়েছেন। জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রথম দৃশ্যমান দায়িত্ব ছিল নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন। সেই সিটি নির্বাচনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন তিনি করেন এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বিজয়ী হয়।
জাহাঙ্গীর কবির নানকের দ্বিতীয় দায়িত্ব ছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসন। এই সংকট নিরসনে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সভাপতি একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগ সফল হয়নি।
রাজনৈতিক উদ্যোগেই আজ বুধবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙ্গেছেন। এর মাধ্যমে একটি বিষয় প্রমাণিত হলো যে, প্রশাসনিক আমলাতান্ত্রিক উদ্যোগের চেয়ে রাজনৈতিক উদ্যোগ অনেক বেশি কার্যকর।
যখন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনশনে গেলো, কিছু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো, তখন এই সংকট ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছিল। বিশেষ করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকে উস্কে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার চেষ্টা করছিল বিভিন্ন মহল।
এই আন্দোলনের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতপন্থীরাও যুক্ত হয়ে পড়েছিল। তাদের লক্ষ্য ছিলো যে কোনো মূল্যে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লাশ। জাহাঙ্গীর কবির নানক যখন দায়িত্ব নেন তখন তিনি একদিকে অসুস্থ রোগীদের যেনো সুচিকিৎসা হয় তার নিশ্চয়তা দেন।
অন্যদিকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। এরপর তিনি বুঝতে পারেন যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনে ড. মোহাম্মদ জাফর ইকবাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এজন্য আওয়ামী লীগের একটি টিম নিয়ে জাফর ইকবালের বাসায় যান এবং শেষ পর্যন্ত জাফর ইকবালকে রাজি করাতে সক্ষম হন। ড. মোহাম্মদ জাফর ইকবাল শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে যাওয়াতে আজ সকালে এই অনশন ভেঙ্গেছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাহাঙ্গীর কবির নানকের কৌশল যেমন প্রশংসিত হয়েছিল, তেমনি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নেওয়া কৌশল প্রশংসিত হয়েছে। ক্রমশ জাহাঙ্গীর কবির নানক লাইম লাইটে আসছেন। তবে জাহাঙ্গীর কবির নানকের একটি কৌশল আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রশংসিত হচ্ছে। তা হলো তিনি একা কোন কিছু না করে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিটি কাজের জন্য একটি টিম তৈরি করছেন, যে টিমটি দিয়ে তিনি কাজটি করাচ্ছেন। যেমন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি ৫ জনের একটি টিম তৈরি করেছিলেন যারা নির্বাচন পরিচালনা করেছিল এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিরোধ মিটিয়েছিল।
এবারও তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নিরসনে একা কাজ না করে একটি টিম তৈরি করেছিলেন। ফলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ক্রমশ লাইভ লাইটে আসছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশেষ করে তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম যুগের অবসানের পর, আওয়ামী লীগে যখন জাতীয়ে নেতৃত্বের একটা অভাব অনুভূত হচ্ছিল, তখন জাহাঙ্গীর কবির নানকের এই কর্মকাণ্ডগুলো রাজনীতির গণ্ডি পেড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশংসিত হচ্ছে।
সুত্রঃ banglainsider.com